ইয়াবা ট্যাবলেটে আসক্ত শিড়্গিত তরম্নণ-তরম্নণীরাই বেশি। তাও তারা সাধারণ কিংবা মধ্যবিত্ত নয়, অভিজাত এলাকার ধনীর দুলাল-দুলালী। পিতা-মাতারা কোটি কোটি টাকার দিকে ছুটছে আর বিলাস বহুল জীবনযাপন করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের আদরের দুলাল-দুলালীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার ফাঁকে মরণ নেশায় আসক্ত। সেইদিকে অভিভাবক হিসেবে তাদের দৃষ্টি নেই। সন্তানরা চাওয়া-মাত্র দুই হাতে টাকার বান্ডিল ঐ সকল পিতা-মাতা তুলে দিচ্ছেন। পিতা-মাতা একটু সচেতন হলে ইয়াবার মরণ ছোবল হতে তাদের মেধাবী সন্তানদের রড়্গা সম্ভব হতো। ইয়াবা একবার সেবন করলে সে আর এটা ছাড়তে পারবে না। সে ইয়াবার পিছনে ছুটতে থাকবে। এ মরণনেশা চিকিৎসায় তেমন কোন সুফল নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে ইয়াবা আসক্ত তরম্নণ-তরম্নণীরা জীবিত থেকেও মৃত। বিয়ে করে কোন লাভ হবে না। ইয়াবা আসক্ত তরম্নণ-তরম্নণীদের যৌন ড়্গমতা মৃত্যুর আগ পর্যন্তô আর ফিরে আসবে না। বিবাহিত ইয়াবা আসক্তদের ছাড়াছাড়ি পর্যন্ত্য হয়ে যায়। এদেশে ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫০০ পিস ইয়াবাসহ ছয় ধনীর দুলালকে গ্রেফতার করা হয় এবং এদেশে প্রথম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে ইয়াবার চালান আটক হয়। গ্রেফতারকৃত ধনীর দুলালদের জেলহাজতে বেশিদিন থাকতে হয়নি। তারা দ্রম্নত বের হয়ে পুনরায় ইয়াবা সেবন ও ওপেন বিক্রি শুরম্ন করে দেয়। বিলাসবহুল গাড়ি দিয়ে তারা ইয়াবা চালান আনা-নেয়া করতো।
গ্রেফতারকৃত ইয়াবার প্রধান হোতা আমিন হুদা এবং ডজন খানেক ডিলার র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের জানান যে, ইয়াবা শিড়্গিত তরম্নণ-তরম্নণীদের মাঝে বেশি বিক্রি হয় এবং এটাতেই তারা আসক্ত বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, স্ড়্গুল-কলেজ ও ইংলিশের ছাত্রছাত্রীরা যে ইয়াবায় বেশি আসক্ত এমন তথ্য তুলে ধরা হয়। এই সকল মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা সহজেই ইয়াবা সেবনে উৎসাহিত হয়। তাদেরকে বলা হয়, ইয়াবা সেবন করলে শরীর স্স্নীম, শরীরে ফ্যাট জমবে না, মন সব সময় সতেজ থাকবে ও জ্ঞান-বুদ্ধি বাড়বে, লেখাপড়ায় উৎসাহ বেড়ে যাবে, ঘুম কম হবে ও ড়্গুধা কমে যাবে। শিড়্গিত তরম্নণ-তরম্নণীদের এই ধরনের কথা বলে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রভাবিত করে। প্রথমে ২/১টি ইয়াবা ট্যাবলেট ফ্রি সেবন করতে দেয়। এরপর তারা টাকা দিয়ে ক্রয় করার জন্য ছুটাছুটি শুরম্ন করে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এই কায়দায় সেবনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। রাজধানী ঢাকা ইয়াবা বেচাকেনার বড় মার্কেট বলে গ্রেফতারকৃতরা র্যাব কর্মকর্তাদের জানায়। স্যার সলিমুলস্নাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ এম এন হুদা বলেন, ইয়াবা আসক্ত প্রতিদিন অনেক তরম্নণ-তরম্নণী চিকিৎসার জন্য আসে। ইয়াবা সেবনে প্রথমে যৌন উত্তেজনা, ঘুম কম ও ড়্গুধা কম হয়। এটা সীমিত সময়। প্রথম প্রথম যৌন উত্তেজনা ও তরম্নণ-তরম্নণী দৈনিক কয়েক দফা দৈহিকভাবে মিলিত হয়। এটার জন্য তারা ইয়াবা সেবনে সহজে উৎসাহিত হয়। কিন্তু এটা সীমিত সময়ের জন্য। ২/১ বছরের মধ্যে তাদের যৌন উত্তেজনা চিরতরে বন্ধ। চিকিৎসা করলে ভাল হয় না।
আগত আসক্তদের মধ্যে কেউ এক বছর বা দুই বছর ইয়াবা সেবন করে আসছে বলে চিকিৎসককে জানায়। হলিফ্যামিলি হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ কবির চৌধুরী বলেন, ইয়াবা একটি ভয়ংকর নেশার উপকরণ। এটা সেবনে যৌবন ও জীবনীশক্তি থাকে না। তাদের চিরতরে দাম্পত্য জীবন পঙ্গু। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজিষ্ট ডাঃ বদরম্নল আলম বলেন, এক থেকে দুই বছর-এর মধ্যে ইয়াবা সেবনকারীদের নার্ভগুলো সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়। তারা তখন জীবিত থেকেও মৃত বলে তিনি মন্তôব্য করেন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ গোলাম রাব্বানি বলেন, ইয়াবা সেবনকারীরা মানসিক রোগে ভুগতে থাকে। অস্থির ভাব এবং যেকোন সময় অঘটন তারা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। বেশির ভাগ ইয়াবা আসক্ত সিজেফ্রেনিয়ার মানসিক রোগের শিকার। শিড়্গিত তরম্নণ সমাজকে রড়্গা করতে হলে ইয়াবার বিরম্নদ্ধে গণচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, ইয়াবার মরণছোবল থেকে সন্তানদের রড়্গা করার মূল দায়িত্ব পিতামাতার এবং তারা একটু সচেতন হলেই আদরের দুলালরা ইয়াবার সর্বনাশা ছোবল থেকে রড়্গা পেতে পারে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন